ভরতখালী ইউনিয়নের দর্শনীয় স্থান টেংরা পীর সাহেবের মাজার উক্ত মাজারে অনেক ইতিহাস অত্র ইউনিয়নকে সুপরিচিত করে তুলেছ। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে জাতী ভেদ নির্বিশেষে সকল শ্রেণীল মানুষ বাতসরিকভাবে অত্র মাজার পরিদর্শন করেন।
অবস্থান: মাননীয় স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলেরাব্বীর আবাস জন্মস্থান বাড়ী হইতে হাফ কিলো পূর্বে মকবুলার রহমান সড়র হতে ভরতখালী ষ্টেশন রোড এর মাঝামাঝি।
টেংরা ফকিরের মাজার ও মাজার সংলগ্ন বটগাছের ইতিহাস।
সম্পূর্ন গাছ কাটার পরেও একদিন একরাত খাড়া অবস্থায় ছিল। বেপারী পরির দিন শুক্রবার সব মুসল্লিদের নিকট অনুরোধ করেন গাছের নিচে সম্মিলিতভাবে দোয়া করার যার গাছটি মাটিতে পড়ে যায়। গাছটির মালিক ইসলাম এর পা তিন তিন বার কাটা লাগছে।
গাছের নিচে দরবেশ ছিল ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৫ ছিল যিনি কি খেত কেই জানতো না। তবে মাঝে মাঝে কিছু লোকের খাদ্য গ্রহণ করত। রাত্রে গাছের নিচে জঙ্গলেই ঘুমাতেন। রত্রিতে দরবেশ যখন জিকির করত তখন পার্শ্বে এক মহিলার জিকিরো্ শোনা যেত কিন্তু কোন মহিলাই সেখানে চোখে পড়েনি। গাছটি থাকা অবস্থায় সাত্তার মন্ডল দরবেশের নিকট জানতে চান গাছের নিকট কি কি আছে? দরবেশ বলছিল গাছের এড়িয়া জুরে শুধু টাকা আর টাকা। ছাত্তার মন্ডল কিছুটা নাছোর বান্দা হয়ে জানতে চান আসলে বটের গাছের নিছে কি আছে। তখন দরবেশ বলেন যে, তুই যখন ছারবিই না এদিকে আয়, সাথে নিয়ে টাকার ডেসকি দেখায় এতে সাত্তার মন্ডলের মাথা খারাপ হয়ে যায় কিভাবে টাকা গুলো কবজা করা যায়। পরের দিন ফন্দি পাকালো রাত্রি মাঠি খুরে টাকাগুলো বাহির করা হবে। ছেলে চটকু ও নান্দুকে সাথে নিয়ে বটের গাছের নিচে হাজির। চুপিসারে টাকা তোলার কাজ শুরু: বাপ ও ছেলে যতই মাঠি খোরে তখন প্রথমে বড় বড় পিপড়া এসে বাধা প্রদান করে এতেও থামেনি সাত্তার মন্ডল আবার শুরু করে আবার সাপ বেরোয়, তাতেও থামেনি। মাটি যতই খোরে টাকার ডেসকি ততই মাটির নিচে নামতে থাকে কিন্তু টাকা পিপাসু সাত্তার হাল ছাড়েনি আবারো শুরু করে মাঠি খোড়া ঠিক তখনেই একটি বিরাট হাতী তাদের তাড়া করে উপায় না পেয়ে সোজা দরবেশের নিকট গিয়ে মাথা নত করে বলে বাবা ভুল হয়েছে। দরবেশ তখন বলে তুই তো অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলেছিস, আমাকে তো আর এখানে থাকতে দিলি না। পিছনে ফিরে দেখ, তোর বাড়ী দিকে দেখ তোর বাড়ীতে আগুন জ্বলছে< পুড়ছে তোর নাবালক শিশু ডিসু, তোর বউয়ের পেটে একটা পাথর জমেছে। এ কথা শুনতে শুনত্ সাত্তার পিছন ফিরে ধেকে সত্তি তার বাড়ীতে আগুন জ্বলছে ও ছেলে ডিসু আগুনে অর্ধপোড়া। ৬ মাস পর ডিসুর মা মারা যায়। পরেই ইসলাম, চটকু, নান্দু মারা যায়।
১৯৮১ ইটভাটা হয় ১৯৮২ গাছটা বিক্রী হয়।
দরবেশ জীবিত থাকা কালে অনেক আলামতই লক্ষ্য করা যায়, সোয়া হাতি সাপ, দাড়িয়ালা সাপ, পাগড়ীওয়লা সাপ, চুল ওয়ালা সাপ, দিনের বেলায় গাছের ডালে শুয়ে থাকতো কিন্তু কাহারো ক্ষতি করত না। নানান প্রজাতির পাখি অভয়আশ্রম ছিল বট পাকুরের ডালে।
কোন ঝড় তুফানে গাছের ডাল পাল ভাঙতে পারে নি যদিও ডালের ৭০/৮০ শতাংশ পোকা মাকরে খেয়ে সাবার করেছে। যখন তুফান থেমে যায় তারপর গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে কিছুটা চিহ্ণ রেখে অর্থাত বিকট শব্দে ডাল মাঠিতে পড়ে যা গ্রামের সব লোকেই জানত।
যে লোকেই এই এটর গাছের ডাল আগুনে পুরেছে তারই মলদ্বার দি রক্ত পরত।
দরবেশ চলে যাওয়ার পর থেকে আর কোন আলামত লক্ষ্য করা যায় নি।
কুমোদপুরের এক ব্যাপারী ৩০ হাজার টাকা দিয়ে গাছটি কিনে নেয়। পরবর্তীতে ত্রিমোনীর আরেক বেপারী মোসলেম গাছটি ক্রয়ের জন্য ১ লক্ষ ৩০ টাকা হাকে কিন্তু প্রথম বেপারী কিছুটা নাছোর হয়ে গাছটি আর বিক্রী করেন নি।
১৯৭৩ সালে চটকু নান্দু ও সাত্তার টাকা তুলতে যায়। গাছের এড়িয়া ১ একর।
এখানে মারা যাওয়ার পর তাকে খিয়ার অঞ্চলে দেখায় যায়। অনেক ব্যবসায়ী ঘোড়ায় সওয়ার করে ব্যবসা করত।
চিথুলীয়াই জন্ম ও চিথুলীয়া প্রথম দেহ ত্যাগ করেন। পরে বগুড়ার খিয়ার অঞ্চলে দেখায়। যার প্রমাণ ঘোড়াওয়ালার তাকে জিজ্ঞেস করেন আপনাকে মরার কথা শুনেছি চিথুলীয়া কিন্তু এখানে কিভাবে আসলেন। টেংরা ফকির বলেন যে, আমার তো সময় কম তবে তোমরা শোন আমার চিথুলীয়া বাড়ীতে গিয়ে বলবে চালের পাতিলের নিচে তালাইয়ের এক পড়নের নিছে ২৭ টাকা আছে যা আমার মেয়েকে দিতে বলেবে। ঘোড়াওয়ালা কিছুটা বিস্মিত হয়ে ভাবলেন শুনেছি লোকটি মারা গেছে তাহলে দেখা যাক পাতিলের নিচে ২৭ টাকা আছে কিনা? ঠিক সেদিনেই রাত ৯.০০ ঘটিকায় গোড়াওয়ালা আসে চিতুলীয়া গ্রামে টেংরাবাবার বাড়ীতে এস তার স্ত্রীকে বলেন যে, দেখোতো তোমার পাতিলের নিচে ২৭ টাকা আছে কিনা? খোজ নিয়ে দেখা যায় ২৭ টাকাই আছে। ঘোড়াওয়ারা হতবাক এবং কিছুটা হতচকিত হয়ে ভাবেন এ কাকে দেখলাম এবং হারালাম।
কিছুদিন পর খিয়ারের ইমতপুর থেকে এক জমিদার চিথুলীয়া আসে। এস টেংরা ফকির সাহেবের মাজার দেখতে পায় এবং তার অঞ্চলে এই টেংরা ফকিরের খিয়ার অঞ্চেলের ইতিহাস বর্ণান করেন।
জমিদারের বর্নণা মতে: টেংকা ফকির ওই জমিদারের কাছে ইটকাটার জন্য জায়গা চায়। এ কথা বলতে না বলতেই জমির দার তা গালে একটি চর মারে। থাপ্পর খেয়ে জমিদারের হাত ধরে মাফ চেয়ে টেংরা ফকির বলেন যে, আমি মারাত্মক ভূল করেছি। জমিদার তাকে ক্ষমা করে দিয়ে সাথে নিয়ে এগোতে থাতে জামিদার বাড়ীতে। পথিমধ্যে এক কূপের পার্শ্বে তাকে ডেকে বসায় কিছু কথা বলার জন্য তারপেরে সেখানে বসে কথা বলতেই তিনি জমিদারকে বলেন যে, আপনার হাতের স্বর্নের অঙ্গুরিটা দেখার খুব সখ যদি একটু হাতে নিয়ে দেখতে দেন বড়উ খুমি হতাম। জমিদার ভাবেন যে, বেচারাকে থাপ্পর মারলাম যাক আংটিটি দেখুক। এই ভেবে আংটি খুলে টেংরা ফকিরকে দিতে না দিতেই কূপের মধ্যে পরে যা। জমিদার রেগে টগবগ বলেন যে, একি করলি তুই। যে ভাবে পারিস আংটি তুলে দিবিই দিবি। টেংকা ফরিক বলেন যে, ঠিকা আছে দিব তার পরে এখান থেকে যাব। এর ফাকে আরেক বার বলেন যে, ইটের আমার খুব দরকার ছিল যদি একটি জায়গা দেন তো আমার কাজটা সম্পূর্ন হবে। জমিদার আবারো বলেন কই তোল আংটি। টেংরা ফকির বলেন যে, আপনার হাতে দেখেন আংটি তোলা হয়ে গেছে। জমিদার তার হাতে দেখে ঠিকতো আংটি হাতেই আছে। কিছুটা হতবাক ও আশ্চার্য হয়ে ভাবেন এ সাধারন কোন মানুষ না। আবার জমিদার বাড়ীর দিকে চলা। টেংরা ফকিরের তোর অলৌকিক কিছু করতেই হবে তাই ইটের খুব প্রয়োজন। আবারো বায়না ধরেন ইট কাটার জায়গা দিবেন কিনা। পথি মধ্যে রাস্তার দুই পার্শ্বে দুইট বড় কূপ। জমিদার বলেন যে, তোমাকে ইট কাটার জায়গা দিতে পারি কিন্তু একটা শর্ত। তুমি যদি এই কূপ থেকে ডুব দিয়ে ওই কূপে ওঠতে পার তাহলে তোমাকে জয়াগা দিব। টেংরা বাবা বলেন যে, তাই হবে। এই বলে তিনি এই কূপ থেকে ডুব দিয়ে অন্য কূপ দিয়ে বের হয়ে আসে। জমিদারের আর কোন পরীক্ষা করার দরকার হলো না। সত্যিকার অর্থে বূঝে গেল অসাধারন ব্যক্তিত্য। তাই তাকে যতটুকু জায়গা ততটুকুই দিয়ে দিলেন জমিদার। টেংরা ফকির তার নিজের সমাধির ইটস্থ করার জন্য ইট কাটা পোড়ার কাজ শুরু করে দেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস